অতিরিক্ত ঘাম দূর করার ঘরোয়া উপায় - অতিরিক্ত ঘাম কোন রোগের লক্ষণ

অতিরিক্ত ঘাম দূর করার ঘরোয়া উপায় ও অতিরিক্ত ঘাম কোন রোগের লক্ষণ এই সব ধরনের কথা বার্তা সম্পর্কে নতুন তথ্য পেতে হলে এই পোষ্টটি পড়ুন। তাহলে আপনি কেনো অতিরিক্ত ঘামে মানুষ এই সব বিষয় গুলো বুজতে পারবেন।
অতিরিক্ত ঘাম দূর করার ঘরোয়া উপায়
আপনার জন্য এই পোষ্টের নিচের দিকে অতিরিক্ত ঘামার লক্ষণ গুলো সম্পর্কে কিছু পয়েন্ট যোগ করা হয়েছে। আপনি যদি সে পয়েন্ট গুলো প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ভালো করে মনোযোগ সহকারে পড়েন। আশা করি তাহলে আপনি অতিরিক্ত ঘামার অজানা কারণ গুলো জানতে পারবেন।

ভুমিকা

ঘাম হলো শরীরের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া যা শরীরের তাপমাত্রা ও বর্জ্য পদার্থ নিয়ন্ত্রণ করে। গরমে শারীরিক পরিশ্রমের সময় ঘাম হওয়া সাধারণ। তবে অতিরিক্ত ঘাম হলে তা বিভিন্ন রোগের লক্ষণ বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। অতিরিক্ত ঘাম হলে তা সামাজিক ও শারীরিক


অসুবিধা তৈরি করে। অতিরিক্ত ঘাম হলে কী করবেন? এ বিষয়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের তথ্য গুলো ঠিক পাওয়া যায় না। আপনি এই পোষ্টটি ভালো করে মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি বুজতে পারবেন। যে মানুষ কি করনে বেশি ঘেমে থাকে।

অতিরিক্ত ঘাম দূর করার ঘরোয়া উপায়

অতিরিক্ত ঘাম হলে শরীরের তাপমাত্রা বাড়ে এবং ব্যাকটেরিয়া ও দুর্গন্ধ তৈরি হয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আপনি নিচের কিছু ঘরোয়া উপায় গুলো অনুসরণ করতে পারেন। যেমন-

  • প্রতিদিন এক গ্লাস জলে এক চা চামচ ভিনিগার বা অ্যাপল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে পান করুন। এটি শরীরের পোর্স বা ছিদ্র ছোট করে এবং ব্যাকটেরিয়া দূর করে।
  • টোমেটোর রস বা স্লাইস করে যেখানে ঘাম বেশি হয় সেখানে লাগান। এটি অ্যাসট্রিনজেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং ঘাম কমায়।
  • গ্রিন টি বা ব্ল্যাক টি পান করুন। এতে ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন বি থাকে যা ঘামের গ্রন্থি কাবু রাখে। চা ভিজিয়ে রাখার পর তুলো বা তোয়ালে করে নিয়ে ঘামের জায়গায় লাগান।
  • কর্নস্টার্চ ও বেকিং সোডা মিশিয়ে যেখানে ঘাম হয় সেখানে লাগাতে পারেন। এই দুটো উপাদান জল শুষে নেওয়ার ক্ষমতা রাখে। বেকিং সোডা ব্যাকটেরিয়া ও দুর্গন্ধ রোধ করে।
  • হুইটগ্রাস জুস পান করুন। এতে ভিটামিন এ, সি, বি৬ ও বি ১২ এবং ফলিক অ্যাসিড থাকে, যা ঘাম নিয়ন্ত্রণ করে এবং গন্ধ রোধ করে।

এছাড়াও, আপনি পানি, তরল ও শরবত প্রচুর পরিমাণে পান করুন, হালকা রঙের সুতি, পাতলা কাপড় পরিধান করুন। বেশি মশলা, ঝাল ও তেলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন, বি-কমপ্লেক্স যুক্ত খাবার খান, ধূমপান এড়িয়ে চলুন এবং ঘামাচি বা অন্য কোনো ত্বকের সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আশা করি এই ঘরোয়া উপায়গুলো আপনাকে অতিরিক্ত ঘাম থেকে রক্ষা করবে।

মুখে অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার কারণ কি

মুখে অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার কারণ অনেকগুলি হতে পারে। এই সমস্যা সাধারণভাবে হাইপারহাইড্রোসিস নামে পরিচিত। এটা দেহের নির্দিষ্ট অঙ্গে প্রভাব ফেলে, যা ঘামের মাধ্যমে আমাদের শরিরের তাপমাত্রা বের করে দেয় এবং শীতল করে। এর মাত্রাত্রিরিক্ততাকে চিকিৎসা শাস্ত্রে বলে হাইপারহাইড্রোসিস। তবে কিছু সাধারণ কারণ গুলো নিচে দেওয়া হলো

  • উষ্ণ আবহাওয়া বা শারীরিক পরিশ্রমের কারণে মুখে ঘাম হয়ে থাকে।
  • মানসিক চাপ বা উত্তেজনা করনে মুখে অতিরিক্ত ঘাম হয়।
  • মশলাযুক্ত, ঝাল, তৈলাক্ত বা আয়োডিনযুক্ত খাবার খেলে মুখে ঘাম হয়।
  • শারীরিক দুর্বলতা বা ভিটামিন বি-১২ অভাবের কারনে মুখে ঘাম হয়ে থাকে।
  • ধূমপান, ক্যাফেইন বা অন্যান্য উত্তেজক পদার্থ খেলে মুখ ঘেমে যায়।
  • পাউডার বা অন্যান্য কোসমেটিক পণ্যে মুখে ব্যাবহার করলে মুখ ঘেমে যায়।

এছাড়াও অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার কারণ হতে পারে কোনো রোগের লক্ষণ বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও। যেমন, ডায়াবেটিস, থাইরয়েড সমস্যা, মেনোপজ, টিউবারকুলোসিস, হার্ট ডিজিজ, ক্যান্সার ইত্যাদি। এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। তবে নিচের ধাপগুলো আপনি অনুসরণ করলে আপনার মুখে ঘাম হবে না।

  • পুষ্টিকর খাবার, ভিটামিন বি পরিবারের খাদ্য, পাকা ফলমূল ও শাকসবজি বেশি খাওয়া।
  • পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং মুখ, হাত, পা বারবার ধুয়ে ফেলা।
  • শারীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য শীতল কাপড় পরিধান করা।
  • অতিরিক্ত লবণ, মশলা, আয়োডিন, ক্যাফেইন, অ্যালকোহল এবং ধূমপান এড়িয়ে চলা।
  • সুগন্ধি, ডিওডোরেন্ট, পারফিউম বা অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল লোশন ব্যবহার করা।
  • ট্রাইক্লোসামযুক্ত সাবান, চা পাতা, টনিক এসিড বা অন্যান্য ঘাম বিরোধী পদার্থ ব্যবহার করা।
  • প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শে ঘাম বিরোধী ওষুধ, বোটক্স ইনজেকশন বা সার্জারি গ্রহণ করা।

এই সমস্যা গুলো আপনার হলে সমাধান হিসেবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুসরণ করা জরুরি। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, পরিশ্রম করা, স্থিতিশীল মানসিক অবস্থা বজায় রাখা এবং যথাযথ ওষুধ ব্যবহার করা অনেক প্রয়োজন।

অতিরিক্ত ঘাম কোন রোগের লক্ষণ

অতিরিক্ত শরীরে ঘামের সাথে সাথে আরো আছে শরীরে দুর্গন্ধ তৈরি হওয়া। যা একজন ব্যক্তিকে সামাজিকভাবে অনেক সময় মানুষের সামনে লজ্জায় ফেলতে পারে। আসলে স্বাভাবিক মাত্রায় ঘাম আমাদের সবারই হয়ে থাকে। ঘাম আমাদের শরীরের অত্যাবশ্যকীয় একটি প্রক্রিয়া। বরং ঘাম না হওয়াও কখনো বড় ধরনের অসুস্থতার লক্ষণ হয়ে থাকে।


অতিরিক্ত ঘাম যেমন শারীরিক কিছু রোগের লক্ষণ হয়ে থাকে আবার না ঘামলেও শরীরে থাকতে পারে নানা রকমের অসুখ বা রোগ। আবার যদি গরম ছাড়া কেউ যদি ঘামেন তাহলেও তা কিন্তু বড় কোন রোগের লক্ষ হয়ে থাকে। তবে গরম আবহাওয়া কারণে শরীর থেকে ঘাম ঝরে একটি স্বাভাবিক ঘটনা। আমাদের দেহে ঘামের সাথে

শরীরের দূষিত পদার্থ ও বের হয়ে যায়। আবার ঘাম হলে শরীরের বাহিরে অতিরিক্ত পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়, যা আমাদের শরীরের তাপমাত্রা নেমে যায়। অতিরিক্ত ঘাম বিভিন্ন কারণে হতে পারে ও বিভিন্ন রোগের লক্ষণও হতে পারে। যেমন, থাইরয়েড, ডায়াবেটিস, হার্ট ডিজিজ, ক্যানসার, স্ট্রোক, নিউরোলজিক্যাল সমস্যা ইত্যাদি।

এছাড়া, অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে শারীরিক বা মানসিক চাপ, বেশি মশলা বা তেল খাওয়া, অতিরিক্ত ব্যায়াম, ধূমপান, আয়োডিন বা লবণের অতিরিক্ত সেবন ইত্যাদির কারণেও হতে পারে। অতিরিক্ত ঘাম হলে কিছু করণীয় গুলো হলো- পানির সাথে লবণ ও লেবু মিশিয়ে শরবত খাওয়া,

দইয়ের ঘোল বা ডাব খাওয়া, টাটকা ফলের রস খাওয়া, ভিটামিন বি-১২ ও বি-কমপ্লেক্স যুক্ত খাবার খাওয়া, রক্ত পরীক্ষা করে দেখা, ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া ইত্যাদি। অতিরিক্ত ঘাম হলে কোনো রোগের লক্ষণ হতে পারে এইটা সবসময় ভাবা উচিত না।

  • ব্রেন স্ট্রোক আচমকা মাথার যন্ত্রণা হলে প্রচুর ঘাম হতে পারে।
  • নিউরোলজিক্যাল সমস্যা হলে মাথায় টিউমার ও খিঁচুনির মতো অনেক ধরনের সমস্যার অগ্রিম পর্যায়ে অতিরিক্ত ঘামের লক্ষণ হতে পারে।
  • কিছু ক্যানসার, যেমন লসিকা গ্রন্থির ক্যানসারে প্রচুর ঘাম হতে পারে।
  • তবে, অতিরিক্ত ঘাম হলে নিজের শরীরের অবস্থা নিরীক্ষণ করা এবং চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করা উচিত। আশা করি আপনার এই তথ্যগুলো কাজে লাগবে।

ময়েশ্চারাইজার দেওয়ার পর ঘাম বন্ধ করার উপায়

ময়েশ্চারাইজার দেওয়ার পর ঘাম বন্ধ করার উপায় গুলো হলো

  • ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের আগে ত্বককে ভালো করে পরিষ্কার করুন।
  • ময়েশ্চারাইজার ক্রিমটি হাতের তালুতে নয়, মুখে লাগান।
  • হালকা হাত ঊর্ধ্বমুখী স্ট্রোক দিয়ে ক্রিমটা আপনার মুখে ম্যাসাজ করুন।
  • দিনে কয়েকবার ময়েশ্চারাইজার লাগান।
  • চোখের নিচের ত্বক কালো হয়ে যায়, তাই কিছু রেটিনল সহ একটি আই ক্রিম ব্যবহার করুন।
  • ঘাড়ে ক্রিম নিয়ে ঊর্ধ্বগামী স্ট্রোকে হালকাভাবে ম্যাসাজ করুন।

এই টিপসগুলি অভিনেত্রীরা ব্যাবহার করে থাকে। আপনি যদি অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা থেকে ভুগেন, তাহলে ডারমাটোলজিস্টের সাথে পরামর্শ করুন। ওষুধ, বোটক্স বা সার্জারির মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। এছাড়াও আপনি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার সময়, আপনাকে সঠিক পরিমাণ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।

আপনার ত্বকের প্রকৃতি এবং অবস্থানের উপর ভিত্তি করে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। ঘাম বন্ধ করার জন্য সানস্ক্রিন ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ। সানস্ক্রিন আপনার ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকরি আলো থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে থাকে। রাতে মেইকআপ করতে চাইলে সাবধানে ব্যবহার করুন। মেইকআপ সময় থেকে ত্বকের স্বাস্থ্য


নিশ্চিত করতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। সঠিক ত্বক যত্নের রুটিন অনুসরণ করে আপনি সুন্দর এবং স্বাস্থ্যকর ত্বক পাবেন। আপনি যদি এই পরামর্শ মেনে চলেন, তাহলে আপনার ত্বক অনেক সুন্দর তারুণ্যময় দেখাবে। উপরের তথ্য গুলো মেনে চললে আপনার ময়েশ্চারাইজার দেওয়ার পর ঘাম বন্ধ হয়ে যাবে।

লেখকের শেষ কথা

আপনাদের সকলের কাছে যদি আমার পোষ্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে পোষ্টটি আপনাদের বন্ধু-বান্ধবী সকলের মাঝে শেয়ার করে দিন। আর নিয়মিত আমার কাছে থেকে পোষ্ট পাওয়ার জন্য আমার ওয়েবসােইটটি ফলো করে রাখুন। নিয়মিত নতুন নতুন আপডেট পেতে ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। পোষ্টটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url